Dataset Viewer
Auto-converted to Parquet
id
stringlengths
3
7
url
stringlengths
31
795
title
stringlengths
1
93
text
stringlengths
11
178k
608
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%82%E0%A6%B2%E0%A6%BE%20%E0%A6%AD%E0%A6%BE%E0%A6%B7%E0%A6%BE
বাংলা ভাষা
বাংলা ভাষা (বাঙলা, বাঙ্গলা, তথা বাঙ্গালা নামেও পরিচিত) একটি ধ্রুপদী ইন্দো-আর্য ভাষা, যা দক্ষিণ এশিয়ার বাঙালি জাতির প্রধান কথ্য ও লেখ্য ভাষা। মাতৃভাষীর সংখ্যায় বাংলা ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষা পরিবারের পঞ্চম ও মোট ব্যবহারকারীর সংখ্যা অনুসারে বাংলা বিশ্বের সপ্তম বৃহত্তম ভাষা। বাংলা সার্বভৌম ভাষাভিত্তিক জাতিরাষ্ট্র বাংলাদেশের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা তথা সরকারি ভাষা। বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত 'আমার সোনার বাংলা' ও রণসংগীত 'নতুনের গান' বাংলাতে রচিত এবং জাতীয় পর্যায়ের সকল কার্যক্রম বাংলাতে পরিচালিত হয়। বহু ভাষাভাষীর দেশ ভারতের কোনো স্বীকৃত রাষ্ট্রভাষা নেই। ভারতীয় প্রজাতন্ত্রের সংবিধানের অষ্টম তফসিলে ২২ টি ভাষাকে সাংবিধানিক স্বীকৃতি দিয়েছে, যা সংবিধান স্বীকৃত ভাষা বা, তফসিলি ভাষা নামে পরিচিত। ১৯৫০ সালে প্রারম্ভিক কাল থেকেই বাংলা ভারতের সংবিধান স্বীকৃত ভাষা। ভারত সরকার কর্তৃক ২০২৪ সালের ৩ অক্টোবরে বাংলা ভাষাকে ধ্রুপদী ভাষার মর্যাদা দেওয়া হয়। ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা ও আসামের বরাক উপত্যকার সরকারি ভাষা। বঙ্গোপসাগরে অবস্থিত আন্দামান দ্বীপপুঞ্জের প্রধান কথ্য ভাষা বাংলা। এছাড়া, ভারতের ঝাড়খণ্ড, বিহার, মেঘালয়, মিজোরাম, ওড়িশার মতো রাজ্যগুলোতে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বাংলাভাষী জনগণ রয়েছে। ২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী, ভারতের মোট জনসংখ্যার ৮.০৩ শতাংশ মানুষ বাংলা ভাষায় কথা বলে এবং হিন্দির পরেই বাংলা ভারতে সর্বাধিক প্রচলিত ভাষা। ভারতের জাতীয় সংগীত 'জনগণমন' ও স্তোত্র 'বন্দে মাতরম' বাংলা ভাষায় রচিত। বাংলা ভাষায় রচিত 'গীতাঞ্জলী' কাব্যের ইংরেজি অনুবাদের জন্য প্রথম ভারতীয় তথা প্রথম এশিয়াবাসী হিসেবে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। এছাড়াও মধ্যপ্রাচ্য, আমেরিকা ও ইউরোপে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বাংলাভাষী অভিবাসী রয়েছে। সারা বিশ্বে সব মিলিয়ে ২৮.৫ কোটিরও অধিক লোক দৈনন্দিন জীবনে বাংলা ব্যবহার করে। বাংলা সাহিত্যের বিকাশের ইতিহাস ১৪০০ বছর পুরোনো। চর্যাপদ এ ভাষার আদি নিদর্শন। সপ্তম-অষ্টম শতক থেকে শুরু করে বর্তমান যুগ পর্যন্ত বাংলায় রচিত সাহিত্যের বিশাল ভান্ডারের মধ্য দিয়ে বাংলা ভাষা বিকশিত হয়। বাংলা ভাষার লিপি হলো বাংলা লিপি। বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গে প্রচলিত বাংলা ভাষার মধ্যে শব্দগত ও উচ্চারণগত সামান্য পার্থক্য রয়েছে। বাংলার নবজাগরণে ও বাংলার সাংস্কৃতিক বিবিধতাকে এক সূত্রে গ্রন্থনে এবং বাঙালি জাতীয়তাবাদের বিকাশে তথা বাংলাদেশ গঠনে বাংলা ভাষা ও সাহিত্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। বাংলায় প্রায় ৭৫,০০০ পৃথক শব্দ রয়েছে, যার মধ্যে ৫০,২৫০টি (৬৭%) শব্দ "তৎসম" (সংস্কৃত ভাষা থেকে সরাসরি গৃহীত); ২১,০০০টি (২৮%) শব্দ "তদ্ভব" (পালি ও এবং প্রাকৃত ভাষা থেকে উদ্ভূত হয়েছে); এবং প্রায় ৫০০০টি বিদেশি। ১৯৪৭ থেকে ১৯৫২ খ্রিষ্টাব্দে পূর্ব বাংলায় সংগঠিত বাংলা ভাষা আন্দোলন এই ভাষার সাথে বাঙালি অস্তিত্বের যোগসূত্র স্থাপন করেছে। ১৯৫২ খ্রিষ্টাব্দের ২১শে ফেব্রুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিবাদী ছাত্র ও আন্দোলনকারীরা সংখ্যাগরিষ্ঠের মাতৃভাষা বাংলাকে রাষ্ট্রভাষাকরণের দাবিতে নিজেদের জীবন উৎসর্গ করেন। ১৯৮৭ সালের বাংলা ভাষা প্রচলন আইনে বাংলাদেশের সকল রাষ্ট্রীয় কাজে বাংলার ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। ১৯৫২ সালের ভাষা শহিদদের সংগ্রামের স্বীকৃতি স্বরূপ ১৯৯৯ সালে জাতিসংঘ শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি সংস্থা ২১শে ফেব্রুয়ারি দিনটিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণা করে। ইতিহাস বাংলা ভাষার ইতিহাসকে সাধারণত তিন ভাগে ভাগ করা হয়: প্রাচীন বাংলা (৯০০/১০০০-১৪০০ খ্রিষ্টাব্দ) — চর্যাপদ, ভক্তিমূলক গান এই সময়কার লিখিত নিদর্শন। এই সময় আমি, তুমি ইত্যাদি সর্বনাম এবং — ইলা, — ইবা, ইত্যাদি ক্রিয়াবিভক্তির আবির্ভাব ঘটে। মধ্য বাংলা (১৪০০-১৮০০ খ্রিষ্টাব্দ) — এ সময়কার গুরুত্বপূর্ণ লিখিত নিদর্শন চণ্ডীদাসের শ্রীকৃষ্ণকীর্তন ইত্যাদি। শব্দের শেষে "অ" ধ্বনির বিলোপ, যৌগিক ক্রিয়ার প্রচলন, ফারসি ভাষার প্রভাব এই সময়ের সাহিত্যে লক্ষ্য করা যায়। কোনো কোনো ভাষাবিদ এই যুগকে আদি ও অন্ত্য এই দুই ভাগে ভাগ করেন। আধুনিক বাংলা (১৮০০ খ্রিষ্টাব্দ থেকে-বর্তমান) — এই সময় ক্রিয়া ও সর্বনামের সংক্ষেপণ ঘটে, যেমন তাহার → তার; করিয়াছিল → করেছিল। বাংলার প্রাচীন ভাষা খ্রিষ্টপূর্ব তৃতীয় শতক থেকে বাংলায় হিন্দু ব্রাহ্মণগণ এবং বৌদ্ধ আচার্যগণ সংস্কৃত ভাষার চর্চা করত, কিন্তু স্থানীয় বৌদ্ধরা প্রাকৃত ভাষার কোনো কোনো রূপে (ভ্যারাইটি) কথা বলত, যাকে ড. সুনীতি কুমার চট্টোপাধ্যায় উল্লেখ করেছেন মাগধী প্রাকৃতের পূর্ব রূপ বা ভ্যারাইটি হিসেবে। গুপ্ত সাম্রাজ্যের সময়, বাংলা ছিল হিন্দু যাজক বা পুরোহিতদের জন্য সংস্কৃত সাহিত্যের একটি কেন্দ্র, যা স্থানীয়দের কথ্য ভাষাকে প্রভাবিত করে। প্রথম সহস্রাব্দে বাংলা যখন মগধ রাজ্যের একটি অংশ ছিল তখন মধ্য ইন্দো-আর্য উপভাষাগুলি বাংলায় প্রভাবশালী ছিল। এই উপভাষাগুলিকে মাগধী প্রাকৃত বলা হয় এবং এটি আধুনিক বিহার, বাংলা ও আসামে কথিত হত। এই ভাষা থেকে অবশেষে অর্ধ-মাগধী প্রাকৃতের বিকাশ ঘটে। প্রথম সহস্রাব্দের শেষের দিকে অর্ধ-মাগধী থেকে অপভ্রংশের বিকাশ ঘটে। সময়ের সাথে সাথে বাংলা ভাষা একটি স্বতন্ত্র ভাষা হিসেবে বিকশিত হয়। প্রাচীন যুগ অন্যান্য পূর্বাঞ্চলীয় ইন্দো-আর্য ভাষাসমূহের মতো বাংলাও সংস্কৃত ও মগধী প্রাকৃত থেকে ১০০০-১২০০ খ্রিষ্টাব্দে বিকশিত হয়। সেসময় উপমহাদেশের পূর্বাঞ্চলের স্থানীয় অপভ্রংশ ছিল পূর্ব অপভ্রংশ বা অবহট্‌ঠ ("অর্থহীন ধ্বনি"), সেটা থেকেই অবশেষে আঞ্চলিক উপভাষাসমূহের বিকাশ ঘটে, এক্ষেত্রে তিনটি ভাষাদল গঠিত হয় - বাংলা–অসমীয়া ভাষাসমূহ, বিহারি ভাষাসমূহ এবং ওড়িয়া ভাষাসমূহ। অনেকে যুক্তি দেখান যে, এই ভাষাদলগুলোর পৃথকীকরণ অনেক আগেই ঘটেছে, কেউ কেউ ৫০০ খ্রিষ্টাব্দের কথাও বলেন। অনেকে বলেন, মধ্যযুগে প্রাচীন সাহিত্যসমূহের অনেকগুলোকেই আর পাওয়া যায় না, যার ফলে সেসময়কার অনেক শব্দই আমাদের ধরাছোঁয়ার বাইরে। কিন্তু ভাষা স্থির ছিল না: সেসময় ভাষার বিভিন্ন রূপের সহাবস্থান ছিল, আর সেসময়ে লেখকগণ প্রায়ই একাধিক উপভাষায় লিখেছিলেন। উদাহরণস্বরূপ, ষষ্ঠ শতাব্দীর আশেপাশে অর্ধ-মাগধী থেকে অবহট্‌ঠ ভাষার বিকাশ ঘটেছে বলে ধারণা করা হয়, এই অবহট্‌ঠ ভাষা কিছুসময়ের জন্য বাংলা ভাষার পূর্বপুরুষ প্রোটো-বাংলার সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিল। প্রোটো-বাংলা ছিল পাল সাম্রাজ্য এবং সেন রাজবংশের ভাষা। চৈতন্য মহাপ্রভুর যুগে ও বাংলার নবজাগরণের সময় বাংলা সাহিত্য সংস্কৃত ভাষা দ্বারা অত্যন্ত প্রভাবিত হয়েছিল। সংস্কৃত থেকে যে সমস্ত শব্দ বাংলা ভাষায় যোগ করা হয়, তাদের উচ্চারণ অন্যান্য বাংলা রীতি মেনে পরিবর্তিত হলেও সংস্কৃত বানান অপরিবর্তিত রাখা হয়। মধ্যযুগ বাংলা ভাষার ব্যাপক পৃষ্ঠপোষকতা করেন বাংলার মুসলিম শাসকগোষ্ঠী। ফারসির পাশাপাশি বাংলাও বাংলার সালতানাতের দাপ্তরিক ভাষা হিসেবে স্বীকৃত ছিল এবং ব্যাপক হারে ব্যবহার হতো। এছাড়াও প্রত্ন বাংলা ছিল পাল এবং সেন সাম্রাজ্যের প্রধান ভাষা। মধ্য বাংলার লক্ষণ মধ্য স্তরের বাংলা ভাষায় দুইটি সুস্পষ্ট উপস্তর দেখা যায়, আদি-মধ্য আর অন্ত্য-মধ্য। আদি-মধ্য বাংলার স্থিতিকাল আনুমানিক ১৩৫০ হতে ১৪৫০ সন পর্যন্ত । চতুর্দশ শতাব্দে ও পঞ্চদশ শতাব্দে লেখা বলে নিশ্চিতভাবে নেওয়া যেতে পারে এমন কোনো রচনা মিলে না। সুতরাং ১৩৫০ হতে ১৪৫০ অবধি শতাব্দ কালের কতটা প্রাচীন বাংলার অন্তর্গত ছিল এবং কতটা আদি-মধ্য বাংলার অন্তর্গত ছিল তা নিশ্চয় করে বলবার উপায় নাই। সব প্রাচীন রচনায় অষ্টাদশ শতাব্দীর নকল করা উচিত এ পাওয়া গিয়েছে। তাই পঞ্চদশ-ষোড়শ শতাব্দের ভাষার পরিপূর্ণ রূপটি এগুলিতে প্রতিফলিত নয়। তবে চণ্ডীদাসের শ্রীকৃষ্ণকীর্তনের পুথি তেমনি পুরানো না হলেও মূলে হস্তক্ষেপ খুব বেশি না পড়ায় আদি-মধ্য বাংলার পরিচয় খানিকটা পাওয়া যায়। অন্ত্য-মধ্য বাংলার স্থিতিকাল ১৬০১ হতে ১৮০০ সন পর্যন্ত। মনে রাখতে হবে যে এই কালসীমা অত্যন্ত আনুমানিক। সাধু ভাষার পরিবর্তনের কথা মনে রাখলে অন্ত্য-মধ্য উপস্তরের শেষসীমা ১৭৫০ সন ধরাই সঙ্গত। তবে সেই সঙ্গে সাহিত্যে ব্যবহারের দিকেও লক্ষ রাখলে ১৮০০ সন ধরতে হয়। আদি-মধ্য বাংলার প্রধান বিশেষত্ব আ-কারের পরস্থিত ই-কার ও উ-কার ধ্বনির ক্ষীণতা, এবং পাশাপাশি দুই স্বরধ্বনির স্থিতি। যেমন — বড়াই > বড়া, আউলাইল > আলাল। মহাপ্রাণ নাসিক্যের মহাপ্রাণতার লোপ অথবা ক্ষীণতা অর্থাৎ ‘হ্ন (ন্‌হ) > ন’, এবং ‘হ্ম (ম্‌হ) > ম’। যেমন — কাহ্ন > কান, আহ্মি > আমি। [রা] বিভক্তির যোগে সর্বনামের কর্তৃকারকের বহুবচন পদ সৃষ্টি। যেমন — আহ্মারা, তোহ্মারা, তারা। [-ইল] -অন্ত অতীতের এবং [-ইব] -অন্ত ভবিষ্যতের কতৃবাচ্যে প্রয়োগ। যেমন — “মো শুনিলোঁ” (=আমি শুনিলাম), “মোই করিবোঁ” (=মুই করিব)। প্রাচীন [-ইঅ-] বিকরণযুক্ত কর্মভাব-বাচ্যের ক্রমশ অপ্রচলন এবং ‘যা’ ও ‘ভূ’ ধাতুর সাহায্যে যৌগিক কর্মভাব-বাচ্যের সামরিক প্রচলন। যেমন— “ততেকে সুঝাল গেল মোর মহাদানে”, “সে কথা কহিল নয়”। অসমাপিকার সহিত ‘আছ্’ ধাতুর যোগে যৌগিক ক্রিয়াপদ গঠন। যেমন — লইছে < লই + (আ)ছে, রহিলছে < রহিল + (আ)ছে (=রহিয়াছে)। যথাক্রমে বক্তার প্রাতিমুখ্য ও আভিমুখ্য বুঝাতে ‘গিয়া’ ও ‘সিয়া’ (< এসে) অসমাপিকা ক্রিয়াপদ অনুসর্গরূপে ব্যবহার। যেমন — দেখ গিয়া > দেখ গে, দেখ সিয়া > দেখ সে। ষোড়শ-মাত্রিক পাদাকুলক-পজ্ঝটিকা হতে চতুর্দশাক্ষর পয়ারের বিকাশ। আধুনিক ঊনবিংশ ও বিংশ শতাব্দীতে নদিয়া অঞ্চলে প্রচলিত পশ্চিম-মধ্য বাংলা কথ্য ভাষার ওপর ভিত্তি করে আধুনিক বাংলা সাহিত্য গড়ে ওঠে। বিভিন্ন আঞ্চলিক কথ্য বাংলা ভাষা ও আধুনিক বাংলা সাহিত্যে ব্যবহৃত ভাষার মধ্যে অনেকখানি পার্থক্য রয়েছে। আধুনিক বাংলা শব্দভান্ডারে মাগধী প্রাকৃত, পালি, সংস্কৃত, ফারসি, আরবি ভাষা এবং অস্ট্রো-এশীয় ভাষাসমূহ অন্যান্য ভাষা পরিবারের শব্দ স্থান পেয়েছে। অষ্টাদশ শতাব্দীর পূর্বে, বাংলা ব্যাকরণ রচনার কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। ১৭৩৪ থেকে ১৭৪২ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যে ভাওয়াল জমিদারীতে কর্মরত অবস্থায় পর্তুগিজ খ্রিষ্টান পুরোহিত ও ধর্মপ্রচারক ম্যানুয়েল দ্য আসুম্পসাঁও সর্বপ্রথম ভোকাবোলারিও এম ইডিওমা বেঙ্গালা, এ পোর্তুগুয়েজ ডিভিডিডো এম দুয়াস পার্তেস () নামক বাংলা ভাষার অভিধান ও ব্যাকরণ রচনা করেন। ন্যাথানিয়েল ব্র্যাসি হালেদ নামক এক ইংরেজ ব্যাকরণবিদ আ গ্রামার অব দ্য বেঙ্গল ল্যাঙ্গুয়েজ () নামক গ্রন্থে একটি আধুনিক বাংলা ব্যাকরণ রচনা করেন, যেখানে ছাপাখানার বাংলা হরফ প্রথম ব্যবহৃত হয়। বাঙালি সমাজসংস্কারক রাজা রামমোহন রায় ১৮৩২ খ্রিষ্টাব্দে গ্র্যামার অফ্ দ্য বেঙ্গলি ল্যাঙ্গুয়েজ্ () নামক একটি ব্যাকরণ গ্রন্থ রচনা করেন। ভাষা আন্দোলন বাংলাদেশ ১৯৫১-৫২ সালে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে বর্তমান বাংলাদেশ এর মানুষদের উপর বাংলাকে রাষ্ট্রভাষার স্বীকৃতি না দেওয়া এবং ঊর্দু কে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের ভাষা হিসেবে চাপিয়ে দেয়ার চেষ্টার ফলস্বরূপ বাংলা ভাষা আন্দোলন নামক একটি ভাষা আন্দোলন গড়ে ওঠে। এই আন্দোলনে তৎকালীন পাকিস্তান সরকারের নিকট বাংলা ভাষার সরকারি স্বীকৃতি দাবি করা হয়। ১৯৫২ খ্রিষ্টাব্দে ২১শে ফেব্রুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে বহু ছাত্র ও রাজনৈতিক কর্মী নিহত হন। বাংলাদেশে প্রতি বছর ২১শে ফেব্রুয়ারি ভাষা আন্দোলন দিবস পালিত হয়। ১৯৯৯ খ্রিষ্টাব্দের ১৭ই নভেম্বর জাতিসংঘ শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি সংস্থা এই দিনটিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের মর্যাদা প্রদান করে। ভারত বাংলাদেশ ছাড়াও ১৯৫০-এর দশকে ভারতের বিহার রাজ্যের মানভূম জেলায় বাংলা ভাষা আন্দোলন ঘটে। ১৯৬১ খ্রিষ্টাব্দের ভারতের আসাম রাজ্যের বরাক উপত্যকায় একইরকম ভাবে বাংলা ভাষা আন্দোলন সংঘ ভাষা বঙ্গ অঞ্চলের বাঙালি অধিবাসীর মাতৃভাষা। স্বাধীন রাষ্ট্র বাংলাদেশ এবং ভারতের রাজ্য পশ্চিমবঙ্গ ও ত্রিপুরা নিয়ে এই অঞ্চল গঠিত। এছাড়া ভারতের আসাম রাজ্যের দক্ষিণাংশেও এই ভাষা বহুল প্রচলিত। ভারতের আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের অধিকাংশ অধিবাসী বাংলা ভাষায় কথা বলে থাকেন। ভৌগোলিক ভাষাভাষী বাংলা ভাষা বঙ্গভূমির অধিবাসীদের মাতৃভাষা, যা বর্তমান স্বাধীন জাতিরাষ্ট্র বাংলাদেশ এবং ভারতের অঙ্গরাজ্য পশ্চিমবঙ্গ নিয়ে গঠিত। মূল অঞ্চলের পাশাপাশি ত্রিপুরা,দক্ষিণ আসাম এবং ভারতীয় সংযুক্ত অঞ্চল আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে বসবাসরত বাঙালীদেরও মাতৃভাষা বাংলা। ওড়িশা, বিহার এবং ঝাড়খণ্ডের প্রতিবেশী রাজ্যসমূহের বাংলা ভাষায় কথা বলা হয় এবং দিল্লি, মুম্বাই, বারাণসী এবং বৃন্দাবন সহ বঙ্গের বাইরে উল্লেখযোগ্য সংখ্যায় বাংলা ভাষাভাষী রয়েছেন। মধ্যপ্রাচ্য, যুক্তরাষ্ট্র, সিঙ্গাপুর মালয়েশিয়া, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, যুক্তরাজ্য এবং ইতালিতে উল্লেখযোগ্য সংখ্যায় বাঙালি বসবাস করেন। সরকারি মর্যাদা বাংলাদেশের সংবিধানের ৩নং অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, বাংলাদেশের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা তথা সরকারি ভাষা বাংলা। ১৯৮৭ সালের বাংলা ভাষা প্রচলন আইন বাংলাদেশের সকল রাষ্ট্রীয় কাজে বাংলার ব্যবহার বাধ্যতামূলক করেছে। বাংলা বাংলাদেশের জাতীয় ভাষা। ভারতে ভারতের সংবিধান দ্বারা স্বীকৃত ২৩টি সরকারি ভাষার মধ্যে বাংলা একটি। ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, আসাম এবং ত্রিপুরা রাজ্যের সরকারি ভাষা হল বাংলা। এছাড়াও বাংলা ভারতের আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের অন্যতম প্রধান ভাষা। ২০১১ খ্রিষ্টাব্দের সেপ্টেম্বর মাস হতে বাংলা ভাষা ভারতের ঝাড়খণ্ড রাজ্যের দ্বিতীয় সরকারি ভাষা রূপে স্বীকৃত। পাকিস্তানের করাচি শহরের দ্বিতীয় সরকারি ভাষা রূপে বাংলাকে গ্রহণ করা হয়েছে। নোবেলজয়ী বাঙালি কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের দুইটি বাংলা কবিতা বাংলাদেশ ও ভারতের জাতীয় সংগীত হিসেবে গৃহীত হয়। অধিকন্তু, অনেকে মনে করেন যে, শ্রীলংকার জাতীয় সংগীত (শ্রীলঙ্কা মাতা) মূলত রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের একটি বাংলা কবিতার প্রভাবে লেখা হয়েছিল, আবার অনেকে এমনটাও মনে করেন যে জাতীয় সঙ্গীতটি প্রথমে বাংলায় রচিত হয়েছিল এবং তারপর তা সিংহলিতে অনুবাদ করা হয়েছিল। ২০০৯ খ্রিষ্টাব্দে বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচিত প্রতিনিধিরা জাতিসংঘের সরকারি ভাষা হিসেবে বাংলা ভাষাকে মর্যাদা দেওয়ার দাবী জানান। কথ্য ও সাহিত্যের ভাষার বিবিধতা বাংলার কথ্য ও লেখ্য রূপের মধ্যে বিবিধতা বর্তমান। বিভিন্ন শব্দভান্ডার দ্বারা সমৃদ্ধ হয়ে বাংলায় দুই ধরনের লিখনপদ্ধতি তৈরি হয়েছে। সাধু ভাষা সাধু ভাষা বাংলার এক ধরনের লেখ্য রূপ, যেখানে সংস্কৃত ও পালি ভাষাসমূহ থেকে উদ্ভূত তৎসম শব্দভান্ডার দ্বারা প্রভাবিত অপেক্ষাকৃত দীর্ঘ ক্রিয়াবিভক্তি ব্যবহৃত হয়ে থাকে। ঊনবিংশ শতাব্দী ও বিংশ শতাব্দীর প্রথমার্ধে এই ধরনের ভাষা বাংলা সাহিত্যে বহুল ব্যবহৃত হলেও বর্তমানে সাহিত্যে এই ভাষারূপের ব্যবহার নেই বললেই চলে। মান্য চলিত ভাষা চলিতভাষা, যা ভাষাবিদদের নিকট মান্য চলিত বাংলা নামে পরিচিত, বাংলার এক ধরনের লেখ্য রূপ, যেখানে মানুষের কথ্য বাগ্‌ধারায় স্থান পায়। এই লিখনশৈলীতে অপেক্ষাকৃত ছোটো আকারের ক্রিয়াবিভক্তি ব্যবহৃত হয়ে থাকে। বর্তমান বাংলা সাহিত্যে এই ধরনের শৈলী অনুসরণ করা হয়ে থাকে। ঊনবিংশ শতাব্দীর মধ্যভাগে প্যারীচাঁদ মিত্রের আলালের ঘরের দুলাল প্রভৃতি রচনাগুলিতে এই ধরনের শৈলী সাহিত্যে জায়গা করে নেয়। এই শৈলী নদিয়া জেলার শান্তিপুর অঞ্চলে প্রচলিত কথ্য উপভাষা থেকে গঠিত হয়েছে, ফলে একে অনেক সময় শান্তিপুরি বাংলা বা নদিয়া উপভাষা বলা হয়ে থাকে। মান্য চলিত বাংলায় অধিকাংশ বাংলা সাহিত্য রচিত হলেও, কথ্য বাংলা ভাষার উপভাষাসমূহ মধ্যে যথেষ্ট বিবিধতা রয়েছে। কলকাতাসহ দক্ষিণ-পশ্চিম পশ্চিমবঙ্গের অধিবাসীরা মান্য চলিত বাংলায় কথা বলে থাকেন। কিন্তু বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের অন্যান্য অঞ্চলগুলির কথ্য ভাষা মান্য চলিত বাংলার থেকে অনেকটাই ভিন্ন। বাংলাদেশের চট্টগ্রাম ও সিলেট অঞ্চলের কথ্য ভাষার সঙ্গে মান্য চলিত বাংলার খুব সামান্যই মিল রয়েছে। তবে অধিকাংশ বাঙালি নিজেদের মধ্যে ভাব আদানপ্রদানের সময় মান্য চলিত বাংলা সহ একাধিক উপভাষায় কথা বলতে সক্ষম বলে মনে করা হলেও অনেক ভাষাবিদ তা স্বীকার করেন না। উপভাষা [[File:Bengali dialects political map bn.svg|alt=|upright|thumb| বঙ্গভূমির (এবং আসাম ও ঝাড়খণ্ডের কিছু জেলা) একটি মানচিত্র যাতে বাংলা ভাষার উপভাষা সমূহ দেখানো হয়েছে (* দিয়ে শুরু হওয়া মোটা বর্ণের নামগুলোকে কখনো বাংলার উপভাষা আবার কখনো স্বতন্ত্র ভাষা হিসেবে বিবেচনা করা হয়)]] কথ্য বাংলাতে আঞ্চলিক প্রকরণ একটি উপভাষার ধারাবাহিকতা গঠন করে। ভাষাতত্ত্ববিদ সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায় এই উপভাষাগুলি চারটি বৃহৎ ভাগে বিভক্ত করেছেন — রাঢ়ী, বঙ্গ, কামরূপী উপভাষা এবং বরেন্দ্র; তবে অনেক বিকল্প শ্রেণীকরণ প্রকল্পও প্রস্তাব করা হয়েছে। দক্ষিণ-পশ্চিমা উপভাষাগুলি (রাঢ়ী বা নদীয়া উপভাষা) আধুনিক মান্য ভাষাগত বাঙালির ভিত্তি তৈরি করে। পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্ব বাংলাদেশের বেশিরভাগ উপাখ্যানগুলিতে (বাংলাদেশের বরিশাল, চট্টগ্রাম, ঢাকা এবং সিলেট বিভাগ), পশ্চিমবঙ্গে শোনা অনেক যতি ও সুস্পষ্ট ব্যঞ্জনধ্বনিকে উষ্ম ব্যঞ্জনধ্বনি হিসাবে উচ্চারণ করা হয়। পাশ্চাত্য তালব্য-মূর্ধন্য ঘোষ ব্যঞ্জনধ্বনি চ , , যথাক্রমে প্রাচ্যের , , এর সাথে সম্পর্কিত। বাংলার কিছু উপভাষা বিশেষত চট্টগ্রাম এবং চাকমা ভাষার সুর রয়েছে বৈপরীত্য; বক্তার কণ্ঠের উচ্চারণের তীক্ষ্মতা শব্দগুলোকে পৃথক করতে পারে। খারিয়া থাট এবং মাল পাহাড়িয়া ভাষা পশ্চিমাঞ্চলীয় বাংলা উপভাষার সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ হলেও সাধারণভাবে তাদেরকে স্বতন্ত্র ভাষা হিসেবে শ্রেণীকরণ করা হয়। উত্তরাঞ্চলীয় বাংলা উপভাষার সঙ্গে সাদৃশ্য থাকা সত্ত্বেও হাজং কে স্বতন্ত্র ভাষা হিসেবে বিবেচনা করা হয়। উনবিংশ শতাব্দী এবং বিংশ শতাব্দীর প্রথমদিকে বাংলা ভাষার প্রমিতীকরণের সময় ব্রিটিশ কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত কলকাতা ছিল বঙ্গভূমির সাংস্কৃতিক কেন্দ্র। বাংলাদেশের সীমানার পাশে অবস্থিত নদিয়া জেলার পশ্চিম-মধ্য উপভাষার উপর ভিত্তি করে পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশে বর্তমান প্রমিত রূপটি গৃহীত হয়েছে। মাতৃভাষা বাংলা হওয়া সত্ত্বেও পশ্চিমবঙ্গের একজন বক্তা আদর্শ বাংলায় যে শব্দ ব্যবহার করবেন তা বাংলাদেশের একজন বক্তা ব্যবহার নাও করতে পারেন। উদাহরণস্বরূপ পশ্চিমাঞ্চলে ব্যবহৃত নুন শব্দটির পরিবর্তে পশ্চিমপ্রান্তে লবণ শব্দটি ব্যবহার করা হয়। বেশিরভাগ লেখা প্রমিত বাংলায় (এসসিবি) থাকলেও কথ্য উপভাষাগুলি বৈচিত্র‍্য প্রদর্শন করে। কলকাতা সহ দক্ষিণ-পূর্ব পশ্চিমবঙ্গের লোকেরা এসসিবিতে কথা বলে। প্রমিত চলিত থেকে কিছুটা স্বল্প পরিবর্তনের সাথে সাথে অন্যান্য উপভাষাগুলি পশ্চিমবঙ্গ এবং পশ্চিম বাংলাদেশের অন্যান্য অংশে যেমন মেদিনীপুরের উপভাষায় কিছু নিজস্ব শব্দ রয়েছে। তবে, বাংলাদেশের বেশিরভাগ লোক উপভাষায় কথা বলেন, এসসিবি থেকে আলাদা কিছু উপভাষা বিশেষত চট্টগ্রাম অঞ্চলের লোকেরা প্রমিত চলিতরূপেই লেখেন চট্টগ্রাম অঞ্চলে উপভাষাটি সাধারণ বাঙালী জনসাধারণের কাছে সহজে বোধগম্য হয় না। এমনকি এসসিবিতেও বক্তার ধর্ম অনুসারে শব্দভান্ডার পৃথক হতে পারে: হিন্দুরা সংস্কৃত থেকে উদ্ভূত শব্দ এবং মুসলমানরা দেশীয় শব্দের পাশাপাশি ফারসি এবং আরবি ভাষার শব্দ ব্যবহার করার সম্ভাবনা বেশি। উদাহরণস্বরূপ: ধ্বনিব্যবস্থা বাংলা ভাষায় প্রচুর স্বরদ্যোতনা রয়েছে; একই অক্ষরে একাধিক স্বরধ্বনি উচ্চারিত হয়। এর মধ্যে এবং দ্বয় কেবলমাত্র একটি করে স্বরবর্ণ এবং দ্বারা লেখা হয়। সর্বমোট যৌগিক স্বরধ্বনির সংখ্যা ১৭ থেকে ৩১ এর মধ্যে রয়েছে বলে অনেকে ধারণা করেন। সরকার (১৯৮৫) কর্তৃক প্রদত্ত একটি লেখ নিচে দেয়া হল: শ্বাসাঘাত আদর্শ বাংলায় সাধারণত শুরুতে শ্বাসাঘাত লক্ষ করা যায়। বাংলা শব্দগুলো বিমুর্তভাবে দ্বিপর্ববিশিষ্ট; শব্দের প্রথম অক্ষরে মুখ্য শ্বাসাঘাত পড়ে এবং প্রায়ই বিজোড় অবস্থানের অক্ষরগুলোতে গৌণ শ্বাসাঘাত লক্ষ করা যায়। ফলে শব্দটি উচ্চারিত হয় shô-hô-jo-gi-ta "cooperation", যেখানে মোটাদাগ মুখ্য এবং গৌণ শ্বাসাঘাত নির্দেশ করে। যুক্তব্যঞ্জন স্থানীয় বাংলা ভাষায় শব্দের শুরুতে যুক্তবর্ণ থাকে না; সর্বোচ্চ ব্য-স্ব-ব্য আকারের অক্ষর হতে পারে(স্বরধনির দুপাশে ব্যঞ্জনধ্বনি)। অনেক বাঙালি এমনকি ইংরেজি কিংবা সংস্কৃত থেকে ধারকৃত শব্দ উচ্চারণের ক্ষেত্রেও এই ধারাটি বজায় রাখে যেমন গ্রাম (ব্য-ব্য.ব্য-স্ব-ব্য) উচ্চারণ করেন গেরাম (ব্য-স্ব.ব্য-স্ব-ব্য), স্কুল(ব্য-ব্য-স্ব-ব্য) উচ্চারণ করেন ইস্কুল(স্ব-ব্য.ব্য-স্ব-ব্য) হিসেবে। বানানতাত্ত্বিক গভীরতা সাধারণভাবে বাংলা লিপির তুলনামূলক বানানতাত্ত্বিক গভীরতা বেশি নয়, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বাঙালীদের ধ্বনি এবং বর্ণের মধ্যে পারস্পরিক যোগাযোগ রয়েছে। তবে কিছু ক্ষেত্রে উচ্চারণ-বানান অসঙ্গতি ঘটে। এক ধরনের অসঙ্গতি হল একই শব্দের জন্য লেখায় বেশ কয়েকটি বানানের উপস্থিতি। ঊনবিংশ শতাব্দীতে কিছু পরিবর্তন হওয়া সত্ত্বেও, বাংলা বানান পদ্ধতি সংস্কৃত ভাষার জন্য ব্যবহৃত বানানরীতির উপর ভিত্তি করেই রচিত হচ্ছে এবং এভাবে কথ্য ভাষায় কিছু শব্দ সংযোজনের বিষয়টি বিবেচনায় থাকে না। উদাহরণস্বরূপ,অঘোষ দন্তমূলীয়-তালব্য ব্যঞ্জন -এর জন্য তিনটি বর্ণ (, , এবং রয়েছে যদিও বর্ণটি নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে যেমন -এ ব্যবহৃত হয়। তখন অঘোষ দন্তমূলীয় উষ্মধ্বনি শব্দ ধরে রাখে; যেমন "স্কুল", ইত্যাদি। বর্ণটি নির্দিষ্ট ক্ষেত্র যেমন -এ ব্যবহৃত হয়। তখন অঘোষ মূর্ধন্য উষ্মধ্বনি শব্দ ধরে রাখে; যেমনঃ , ইত্যাদি। একইভাবে,ঘোষ তালব্য-দন্তমূলীয় ব্যঞ্জনধ্বনি প্রকাশ করার জন্য দুটি অক্ষর রয়েছে ( এবং )। তাছাড়া, আগে উচ্চারিত এবং লিখিত মূর্ধন্য অনুনাসিক কে এখন সাধারণ আলাপচারিতায় দন্তমূলীয় হিসেবে উচ্চারণ করা হয় (যখন উচ্চারণ করা হয় তখন পার্থক্য বোঝা যায়) (যদি না অপর একটি মূর্ধন্যধ্বনির যেমন , এবং -এর সঙ্গে সংযুক্ত থাকে), তবে বানানে এই পরিবর্তন পরিলক্ষিত হয় না। অর্ধ-সংবৃত সম্মুখ স্বরবর্ণ বানানতাত্ত্বিকভাবে একাধিক উপায়ে নিরূপিত হয়। উদাহরণস্বরূপ: , , , , , । অন্য ধরনের অসঙ্গতিটি লেখায় যথেষ্ট ঔচ্চারণিক তথ্যের ঘাটতিসম্পর্কিত। পূর্ববর্তী ধ্বনির স্বরসঙ্গতির উপর নির্ভর করে লেখায় প্রতিটি ব্যঞ্জনবর্ণের সাথে জড়িত অন্তর্নিহিত স্বরবর্ণটি কিংবা হতে পারে; কিন্তু লেখায় স্পষ্টভাবে প্রকাশ না পাওয়ায় তা পাঠকের জন্য দ্ব্যর্থতা তৈরি করে। তাছাড়া অন্তর্নিহিত স্বরটি প্রায়শই শব্দের শেষে ঊহ্য থাকে (যেমন: ; তবে তা বানানে প্রতিফলিত না হওয়ায় নতুন পাঠকের পক্ষে এটি কঠিন করে তোলে। অনেক যুক্তব্যঞ্জন তাদের মূল ব্যঞ্জনবর্ণের চেয়ে আলাদা রূপে থাকে। উদাহরণস্বরূপ, ব্যঞ্জনবর্ণের এবং যুক্ত হয়ে গঠন করে এবং তা ( উচ্চারিত হয় ) কিংবা ( — ) অথবা (যেমন এর উচ্চারণ ) হিসেবে উচ্চারিত হতে পারে যা কোনও শব্দে যুক্তব্যঞ্জনটির অবস্থানের উপর নির্ভর করে। বাংলা লেখার ব্যবস্থাটি তাই সর্বদা উচ্চারণের সত্যিকারের সহায়ক নয়। ব্যবহারসমূহ বাংলা, অসমীয়া এবং অন্যান্য ভাষার জন্য ব্যবহৃত লিপিটি বাংলা লিপি হিসাবে পরিচিত। বাংলা এবং তার উপভাষায় বাংলা লিপি হিসেবে এবং কিছু ছোটোখাটো পরিবর্তনের সঙ্গে অসমীয়া ভাষায় অসমীয়া বর্ণমালা হিসেবে পরিচিত। নিকটবর্তী অঞ্চলের অন্যান্য সম্পর্কিত ভাষা যেমন ভারতীয় রাজ্য মণিপুরে মৈতৈ মণিপুরী ভাষাও বাংলা বর্ণমালা ব্যবহার করে, যেখানে মৈতৈ ভাষা বহু শতাব্দী ধরে বাংলা বর্ণমালায় রচিত হয়েছে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে মৈতৈ লিপি প্রচার করা হয়েছে। লিখন পদ্ধতি বাংলা লিপি এক ধরনের শব্দীয় বর্ণমালা লিপি, যেখানে ব্যঞ্জনধ্বনির জন্য বর্ণ, স্বরধ্বনির জন্য কারচিহ্ন এবং যদি কোন কার চিহ্ন না থাকে তবে স্বয়ংক্রিয় স্বরবর্ণ হিসেবে অ ধরে নেওয়া হয়। সমগ্র বাংলাদেশ এবং ভারতের পূর্বাঞ্চলে (আসাম, পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা) বাংলা বর্ণমালা ব্যবহৃত হয়। আনুমানিক ১০০০ অব্দে ( অথবা ১০ম থেকে ১১শ শতাব্দীতে) ব্রাহ্মী লিপির পরিবর্তিত রূপ থেকে বাংলা বর্ণমালার উদ্ভব হয়েছে বলে মনে করা হয়। এক্ষেত্রে লক্ষণীয় যে বাংলাদেশ মুসলিম প্রধান দেশ হওয়া সত্ত্বেও এটি পাকিস্তানে ব্যবহৃত শাহমুখি লিপির মত আরবি ভিত্তিক বর্ণমালার পরিবর্তে বাংলা বর্ণমালা ব্যবহার করে। বাংলা ভাষায় বক্রলিপিতে নয়টি স্বরধ্বনি এবং দুটি যৌগিক স্বরধ্বনি নির্দেশ করার জন্য ১১ টি প্রতীক বা চিহ্ন এবং ব্যঞ্জনধ্বনি ও অন্যান্য প্রভাবকের জন্য ৩৯ টি প্রতীক ব্যবহৃত হয়। এক্ষেত্রে লক্ষণীয় যে বড় হাতের এবং ছোট হাতের বর্ণের মধ্যে কোন পার্থক্য নেই। বর্ণগুলো বাম থেকে ডানে লেখা হয় এবং ফাঁকা স্থান গুলো লিখিত শব্দসমূহ পৃথক করতে ব্যবহৃত হয়। বাংলা লেখায় দুটি বর্ণকে পাশাপাশি যুক্ত করার জন্য একটি সমান্তরাল রেখা টানা হয় যাকে মাত্রা বলা হয়। বাংলা লিপি আবুগিদা হওয়ায় ব্যঞ্জনবর্ণ গুলো সাধারণত উচ্চারণগত ভাষাতত্ত্ব নির্দেশ করে না বরং উহ্যভাবে স্বরধ্বনি ধরে রাখে। ফলে এগুলো প্রকৃতিগতভাবে অক্ষর। উদ্ধৃত্ত স্বরধ্বনি সাধারণত একটি পশ্চাৎ স্বরধ্বনি। কোন রূপ স্বরধ্বনি উচ্চারণ ব্যতীত কোন একটি ব্যঞ্জনধ্বনির উচ্চারণে জোর প্রদান করতে মূল ব্যঞ্জনবর্ণের নিচে হসন্ত () নামক চিহ্ন ব্যবহৃত হয়। এই চিহ্নটি সব সময় পাওয়া যায় না; তবে যখন উচ্চারণের বৈপরীত্য দেখা যায় তখন এটি ব্যবহৃত হয়। বাংলা ব্যঞ্জন ধ্বনির চিত্রমূলের আবুগিডা প্রকৃতি সর্বদা সামঞ্জস্যপূর্ণ থাকে না। প্রায়শই ব্যঞ্জনান্ত অক্ষরসমূহে হসন্ত না থাকলেও কোন স্বরধ্বনি উচ্চারিত হয় না। সহজাত ব্যতীত কিছু স্বরধ্বনির পরে একটি ব্যঞ্জনাত্মক ধ্বনি উপরের, নিচে, আগে, পরে বা ব্যঞ্জনবর্ণের চিহ্নের চারপাশে বিভিন্ন স্বরবর্ণ ব্যবহার করে সর্বব্যাপী ব্যঞ্জনবর্ণ-স্বর লিখনরূপের নিয়ম গঠন করে শব্দস্বরূপাত্মকভাবে উপলব্ধি করা যায়। "কারচিহ্ন" নামে পরিচিত এই শব্দস্বরূপগুলি স্বররূপ এবং এগুলি স্বাধীনভাবে ব্যবহৃত হতে পারে না। বাংলায় স্বরবর্ণগুলো দুটি রূপ নিতে পারে: লিপির মূল তালিকাতে পাওয়া স্বতন্ত্র রূপ এবং নির্ভরশীল, সংক্ষিপ্তরূপ (উপরে বর্ণিত কারচিহ্ন)। কোনও পূর্ববর্তী বা নিম্নলিখিত ব্যঞ্জনবর্ণ থেকে বিচ্ছিন্নভাবে একটি স্বরকে উপস্থাপন করতে, স্বরবর্ণের স্বতন্ত্র রূপ ব্যবহার করা হয়। অন্তর্নিহিত-স্বর-দমনকারী হসন্তের পাশাপাশি, আরও তিনটি চিহ্ন সাধারণত বাংলাতে ব্যবহৃত হয়। এগুলি হল উর্ধ্বধাবিত চন্দ্রবিন্দু (ঁ) দ্বারা স্বরবর্ণের অনুনাসিক এর অনুপস্থিতিকে বোঝানো হয় (যেমন চাঁদ), পশ্চাদ্ধাবিত অনুস্বার ঘোষ পশ্চাত্তালব্য নাসিক্যধ্বনি (ঙ) ইঙ্গিত করে (যেমন বাংলা; "বাঙলা") এবং পশ্চাদ্ধাবিত বিসর্গ (ঃ) অঘোষ কণ্ঠনালীয় উষ্মধ্বনি (হ) (যেমন উঃ! [উঃ]" আউচ!") বা পরবর্তী ব্যঞ্জনের দ্বিত্ব (যেমন দুখখ [দুকু] "দুঃখ") ইঙ্গিত করে। বাংলা যুক্তব্যঞ্জনসমূহ (লিখিত যুক্তব্যঞ্জন) সাধারণত সংযুক্ত হিসাবে লেখা হয়, যেখানে প্রথমে যে ব্যঞ্জনবর্ণ আসে তা পরবর্তীটির উপরে বা বাম দিকে যুক্ত হয়। এই সংযুক্তিতে মাঝেমাঝে মূল রূপের চেয়ে এতটাই বিকৃত হয় যে তাকে আলাদা করে চেনা যায় না। বাংলা লিপিতে, এমন প্রায় ২৮৫টি যুক্তব্যঞ্জন রয়েছে। তবে যুক্তাক্ষর গঠনের কিছু বাহ্যিক নিয়ম থাকলেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তা ছোটবেলা থেকে রপ্ত করতে হয়। সম্প্রতি, তরুণ শিক্ষার্থীদের উপর এই বোঝা হ্রাস করার লক্ষ্যে, দুটি মূল বাংলা-ভাষা অঞ্চল (পশ্চিমবঙ্গ এবং বাংলাদেশ) এর বহু যুক্তাক্ষরের "অস্পস্ট" আকৃতির সমাধানের জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলি চেষ্টা করেছে এবং ফলস্বরূপ, আধুনিক বাংলা পাঠ্যপুস্তকে যুক্তবর্ণগুলোর আরও বেশি "স্বচ্ছ" রূপ ধারণ করা শুরু হয়েছে, যেখানে একটি যুক্তাক্ষরের ব্যঞ্জনবর্ণগুলি বাহ্যিক রূপ সহজেই প্রকাশ পায়। তবে, যেহেতু এই পরিবর্তনটি তত বিস্তৃত নয় এবং বাকী বাংলা মুদ্রিত সাহিত্যের মতো একইভাবে অনুসরণ করা হচ্ছে না, তাই আজকের বাংলা-শিক্ষিত বাচ্চাদের সম্ভবত নতুন "স্বচ্ছ" এবং পুরাতন "অস্বচ্ছ" উভয় রূপই চিনতে হবে, যা শেষ পর্যন্ত শেখার বোঝা পরিমাণ বৃদ্ধি করেছে। বাংলা বিরামচিহ্ন, "।" (দাড়ি) — একটি ফুলস্টপ এর বাংলা সমতুল্য — যা পশ্চিমা লিপি থেকে গৃহীত হয়েছে এবং ব্যবহারও তাদের অনুরূপ। নমুনা পাঠ্য নিম্নলিখিত বাংলা ভাষাতে মানবাধিকার সনদের প্রথম ধারার নমুনা পাঠ্য: বাংলা লিপিতে বাংলা ভাষা ধারা ১: সমস্ত মানুষ স্বাধীনভাবে সমান মর্যাদা এবং অধিকার নিয়ে জন্মগ্রহণ করে। তাঁদের বিবেক এবং বুদ্ধি আছে; সুতরাং সকলেরই একে অপরের প্রতি ভ্রাতৃত্বসুলভ মনোভাব নিয়ে আচরণ করা উচিত। বাংলার রোমানীকরণ . '''আন্তর্জাতিক ধ্বনিমূলক বর্ণমালাতে বাংলা ভাষার উচ্চারণ . সম্পর্কিত ভাষাসমূহ বাংলা ভাষার সাথে নেপালি ভাষার ৪০ শতাংশ সাদৃশ্য রয়েছে। এছাড়া অসমীয়া ভাষা, সাদরি ভাষা প্রায় বাংলার অনুরূপ। অনেকেই অসমীয়াকে বাংলার উপভাষা বা আঞ্চলিক রীতি হিসেবে বিবেচনা করেন। সাঁওতালি ভাষা, বিষ্ণুপ্রিয়া মণিপুরী ভাষার সাথেও বেশ সাদৃশ্য লক্ষ্য করা যায়। অসমীয়ার পর বাংলার সবথেকে কাছের ভাষা ওড়িয়া। অসমীয়া, চাটগাঁইয়া, সিলেটি এবং প্রমিত বাংলার সাথে তুলনা আরও দেখুন ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষাসমূহ ইন্দো-ইরানি ভাষাসমূহ ইন্দো-আর্য ভাষাসমূহ বাংলাদেশের ভাষা বৃহত্তর ময়মনসিংহের ভাষা সিলেটি ভাষা চাটগাঁইয়া ভাষা রংপুরী ভাষা বাংলা উপভাষা বাংলা লিপি বাংলা সংখ্যা পদ্ধতি বাংলা ভাষা আন্দোলন আরবি লিপিতে বাংলা লিখন বাংলা একাডেমি পশ্চিমবঙ্গ বাংলা আকাদেমি ইংরেজি ভাষা হিন্দি ভাষা উর্দু ভাষা আরবি ভাষা ফার্সি ভাষা তথ্যসূত্র আরও পড়ুন . . . . . . . Chakraborty, Byomkes, A Comparative Study of Santali and Bengali, K.P. Bagchi & Co., Kolkata, 1994, Byomkes Chakrabarti . . . . . . . . . . . . . . . শ, রামেশ্বর: সাধারণ ভাষাবিজ্ঞান ও বাঙ্গাল ভাষা, পুস্তক বিপনি, ১৯৯৭ হালদার নারায়ণ : বাংলা ভাষা প্রসঙ্গ: বানান কথন লিখনরীতি, পুস্তক বিপনি, কলকাতা, ২০০৭ . Thompson, Hanne-Ruth (2012). Bengali''. Volume 18 of London Oriental and African Language Library. John Benjamins Publishing. . বহিঃসংযোগ বাংলা একাডেমি পূর্ব ইন্দো-আর্য ভাষা বাংলাদেশের ভাষা ভারতের ভাষা ভারতের সরকারি ভাষাসমূহ পশ্চিমবঙ্গের ভাষা ত্রিপুরার ভাষা আসামের ভাষা সরকারীভাবে ভারতীয় লিপিতে লেখা ভাষা সাহিত্য অকাদেমি স্বীকৃত ভাষা ঝাড়খণ্ডের ভাষা বিহারের ভাষা
796
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%AA%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%A7%E0%A6%BE%E0%A6%A8%20%E0%A6%AA%E0%A6%BE%E0%A6%A4%E0%A6%BE
প্রধান পাতা
নির্বাচিত নিবন্ধ আপনি জানেন কি... ভালো নিবন্ধ আজকের নির্বাচিত ছবি বিষয় অনুযায়ী বাংলা উইকিপিডিয়া সম্পর্কিত সংস্থা অবদানকারীর জন্য পাঠ্য উইকিপিডিয়ার সহপ্রকল্প অন্যান্য ভাষায় উইকিপিডিয়া
822
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%82%E0%A6%B2%E0%A6%BE%E0%A6%A6%E0%A7%87%E0%A6%B6
বাংলাদেশ
"বাংলাদেশ () দক্ষিণ এশিয়ার একটি স্বাধ(...TRUNCATED)
827
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%A6%E0%A7%81%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%97%E0%A6%BE
দুর্গা
"দুর্গা (; অর্থাৎ \"যিনি দুর্গতি বা সংকট (...TRUNCATED)
839
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%86%E0%A6%A8%E0%A6%A8%E0%A7%8D%E0%A6%A6%E0%A6%AE%E0%A6%A0
আনন্দমঠ
"আনন্দমঠ ঊনবিংশ শতাব্দীর ঔপন্যাসিক ব(...TRUNCATED)
855
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%B8%E0%A7%8C%E0%A6%B0%E0%A6%AD%20%E0%A6%97%E0%A6%99%E0%A7%8D%E0%A6%97%E0%A7%8B%E0%A6%AA%E0%A6%BE%E0%A6%A7%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%BE%E0%A6%AF%E0%A6%BC
সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়
"সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় বা সৌরভ গাঙ্গুলী ((...TRUNCATED)
864
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%B6%E0%A7%87%E0%A6%96%20%E0%A6%B9%E0%A6%BE%E0%A6%B8%E0%A6%BF%E0%A6%A8%E0%A6%BE
শেখ হাসিনা
"শেখ হাসিনা ওয়াজেদ (জন্ম: ২৮ সেপ্টেম্(...TRUNCATED)
867
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%B6%E0%A7%87%E0%A6%96%20%E0%A6%AE%E0%A7%81%E0%A6%9C%E0%A6%BF%E0%A6%AC%E0%A7%81%E0%A6%B0%20%E0%A6%B0%E0%A6%B9%E0%A6%AE%E0%A6%BE%E0%A6%A8
শেখ মুজিবুর রহমান
"শেখ মুজিবুর রহমান (১৭ মার্চ ১৯২০ – ১৫ আ(...TRUNCATED)
1089
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%95%E0%A6%A5%E0%A7%8D%E0%A6%AF%20%E0%A6%AD%E0%A6%BE%E0%A6%B7%E0%A6%BE
কথ্য ভাষা
"মানুষে যে ভাষাগুলোতে কথা বলে, সেগুলো (...TRUNCATED)
1094
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%87%E0%A6%89%E0%A6%A8%E0%A6%BF%E0%A6%95%E0%A7%8B%E0%A6%A1
ইউনিকোড
"ইউনিকোড (যা আনুষ্ঠানিকভাবে ইউনিকোড ম(...TRUNCATED)
End of preview. Expand in Data Studio

Wikipedia Bangla / Bengali dump of 2025-07-01 extracted using code from legacy-datasets/wikipedia.

Usage:

from datasets import load_dataset

ds = load_dataset("turjo4nis/wikipedia-bn-dump-20250701",  split="train")

Code used to extract:

from datasets import load_dataset

# Visit this link to find the latest dump date: "https://dumps.wikimedia.org/bnwiki/"

ds = load_dataset(
    "wikipedia",
    language="bn",
    date="20250701",
    trust_remote_code=True,
)
Downloads last month
36